৫:২৯ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশি বৃটিশ আইনজীবী আব্দুন নুরের বাড়িতে ভাং'.চুর-লুট'.পা.টের অভি'.যোগ
বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের মিরগাঁও গ্রামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ আইনজীবী মো. আব্দুন নূরের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারীরা তাঁর বাড়ি থেকে ১০ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছেও বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন যুক্তরাজ্যের লুটন ক্রাউন কোর্টের জুরি বোর্ডের সদস্য এ আইনজীবী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশে তার বাসা বাড়িসহ বেশ কিছু সম্পত্তি রয়েছে।
এসব সম্পত্তি তার কিছু আত্মীয় স্বজন দেখাশোনা করেন। আব্দুন নুর বলেন, এসব সম্পত্তির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে স্থানীয় একটি চক্রের। এরা দীর্ঘদিন থেকেই তার সম্পত্তি আত্বসাত করতে নানাভাবে চক্রান্ত করে আসছে। এরা একাধিকবার আব্দুন নুরের নিকট বিশাল অংকের চাঁদা দাবি করেছে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসে তারা ফোন করে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় তারা আব্দুন নুরের বাড়িঘরে হামলা লুটপাঠ চালিয়ে সবকিছু নিয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে তিনি একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে আব্দুন নুর আরো বলেন, এই চক্রের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর এরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারী পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে এরা তার বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে ঘরের তালা ভেঙ্গে ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। ঘরের দরজা জানালা গ্রীল ভাংচুর করেছে। তারা অন্তত ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
লুট হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে বুলেট প্রুফ স্টিলের দরজা, বেসিন, পানির টেপ, জিআাই পাইপ, বৈদ্যুতিক তার, সিসি ক্যামেরা, আইপিএস, , পাখা, পানির মোটর, আসবাবপত্র, হাড়ি বাসন পাতিলসহ আরো মূল্যবান জিনিসপত্র। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আব্দুন নুরের শ^াশুড়ি জোছনা বেগম বাদী হয়ে গত ১৯ জানুয়ারী বিশ^নাথ থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং- ০৮।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন, মিরগাঁও গ্রামের মৃত বশির মিয়ার পুত্র লিলু মিয়া, মৃত মনির মিয়ার পুত্র আখতার হোসেন, মৃত মছদ্দর আলীর পুত্র ফারুক, মৃত আব্দুল বারির পুত্র সাইস্তা, মৃত মখলিছ আলীর পুত্র আখজ্জুল আলীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জন। মামলার অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই স্থানীয়ভাবে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। পুলিশ মামলাটি এফআইআর করে আদালতে প্রেরণ করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামি লিলু মিয়া এবং আখতার হোসেনকে আটক করেছে। এরা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। বাকী আসামিদের ধরতে বিশ^নাথ থানা পুলিশ গড়িমসি করছে বলেও অভিযোগ করেছেন আব্দুন নুর।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুন নুর বলেন, এই চক্র তাকে কিছুতেই শান্তিতে থাকতে দিচ্ছেনা। তাদের কারনে দেশে এসেও তিনি কয়টা দিন ভালোভাবে থাকতে পারেননা। ২০১৭ সালে প্রায় ২০ বছর পর তিনি দেশে আসেন। তখন এই সাইস্তা, আখতার আর লিলু গংরা তার নিকট বড় অংকের চাঁদা দাবি করেছিল। তাদের কথা হলো বাংলাদেশে থাকতে হলে এবং সম্পদ রক্ষা করতে হলে তাদেরকে অবশ্যই চাঁদা দিতে হবে। কিন্তু তিনি কখনোই তাদেরকে চাঁদা দিতে রাজি হননি। যেকারনে সেবার তারা আব্দুন নুরের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছিল।
তারা কাল্পনিক অভিযোগ এনে বলেছিল তিনি না কি গ্রামের মসজিদে তালা মেরে দিয়েছেন। অথচ মিরগাঁও মসজিদটি আব্দুন নুরের নিজের অর্থায়নে নিজের জায়গায় করে দিয়েছেন। এমনকি এসব অভিযোগে তারা আব্দুন নুরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিল। যার নং-১৯৪/২০১৭। পরবর্তীতে এই মামলাটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আব্দুন নুর বলেন, তারা ভাংচুর আর লুটপাঠ চালিয়ে ক্ষ্যান্ত হয়নি।
তারা হুমকি দিয়ে বলেছে তাদেরকে চাহিদা মোতাবেক চাঁদা না দিলে তারা তার বাসা বাড়ি সবকিছু আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেবে। দেশে গেলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। আমার মামলার বাদীকেও তারা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আব্দুন নুর বর্তমান অন্তর্বীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা, বাংলাদেশ সেনাবাহিণী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা প্রশাসকসহ সংষিøষ্ট সকল মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।