৬:৪৬ অপরাহ্ণ
জকিগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত ৫
জকিগঞ্জে দিনভর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারী ও আওয়ামীলীগ কর্মীসমর্থকদের মাঝে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রথমে ছাত্রজনতার দখলে জকিগঞ্জের রাজপথ থাকলেও পরে আওয়ামীলীগের কর্মীদের সাথে দফায় দফায় ধাওযা পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পিছু হঠে আন্দোলনকারীরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে বেলা ১১টার পর থেকে জকিগঞ্জ শহর ছাত্র-জনতার দখলে ছিল।
এ সময় জমায়েতের কর্মসূচি ঘোষণা দিলে স্বল্প কিছু কর্মী-সমর্থক ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সেভাবে মাঠে নামতে দেখা যায়নি। জকিগঞ্জ থানা পুলিশ ছিল নির্বিকার। জকিগঞ্জ বাজারের প্রধান প্রধান পয়েন্ট দখল করে বিক্ষোভ মিছিল করছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবিতে নানান শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন হাতে দেখা যায়। অনেকের গায়ে ও মাথায় ছিলো জাতীয় পতাকা।
কারো গায়ে জড়ানো ছিল লাল কাপড়। রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শত শত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সিলেট-জকিগঞ্জ রোডের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলটি জকিগঞ্জ পৌরশহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করছে। এর আগে সকাল সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে হাফসা কলেজ ও জকিগঞ্জ বাজারের পূর্ব পাশে জড়ো হয়।
মিছিল শুরু হওয়ার সময়ে পুলিশ ও আওয়ামীলীগ কর্মীসমর্থকদের দ্বারা হামলার অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা ১টা ৩০ মিনিটের সময় জকিগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বর ও এম. এ হক চত্ত্বর দখল করে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করে। এ সময় জকিগঞ্জ বাজারের আধুনিক গার্মেন্টস ও শুভেচ্ছা টেলিকম সহ কিছু দোকানপাটের সাটারে লাটি সোটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনকানীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তর। শিক্ষা অফিস, নির্বাচন অফিস ও উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দীন চৌধুরীর কার্যালয়ের গ্লাসে ইট পাটকেল ছুড়ে ভাংচুর চালায় আন্দোলন কারীরা। পরে জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদের বাড়িতে হামলা হয়। হামলা চলে জকিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কমরুর বাড়িতেও।
বাদ যায়নি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগ নেতা শিহাব উদ্দীনের বাড়িও। হামলা করে ভাংচুর করা হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এম আজমল হোসেনের অফিসে। তাছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালামের অফিসে হামলার কথা জানিয়েছেন পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদ। বেলা ২টার দিকে হাসপাতাল গেটে আওয়ামীলীগের ধাওয়া খেয়ে পিছু হঠে আন্দোলনকারীরা।
পরে আওয়ামীলীগ কর্মীসমর্থকরা জকিগঞ্জ বাজারে এসে অবস্থান নেয়। এদিকে, অসহযোগ আন্দোলনের ফলে জকিগঞ্জে সব ধরনের দোকানপাট, মার্কেট ও বিতানগুলো বন্ধ দেখা যায়। সকাল থেকে রাস্তাঘাটেও যান চলাচল কম দেখা গেছে । এদিকে ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি কোন ধরনের দূরপাল্লার গণপরিবহন । এতে করে পুরো জকিগঞ্জ জুড়ো এক ধরনের চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।