১২:৫৪ অপরাহ্ণ

শৈশবে যৌ'ন নি'পী'ড়ন মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মূল কারণ: গবেষণা
শৈশবে যৌন নিপীড়ন মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মূল কারণ। এমন তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায়।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, বাংলাদেশের ২৮.৩% মেডিকেল শিক্ষার্থী শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
এই অভিজ্ঞতা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে, বিশেষত বিষণ্নতা ও ইন্টারনেট আসক্তির মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষকরা সমাজে শৈশব যৌন নিপীড়ন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন।
আজ রবিবার (২০ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গবেষক দলের প্রধান মো. আবু বকর সিদ্দিক।
তিনি জানান, তুরস্কের ‘ইস্তানবুল তিচারেট ইউনিভার্সিটি’তে অনুষ্ঠিত ‘১ম আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ স্টাডিজ’ সম্মেলনে “Childhood Sexual Abuse, Internet Addiction, Problematic Pornography Use, and Depression among Medical Students in Bangladesh” শীর্ষক গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়।
গবেষক দলে আরও রয়েছেন শাহ জালাল আহমেদ, মো. রাজওয়ানুল্লাহ শাকিল, এবং খান মোহাম্মদ আন নাজমুস সাকিব।
গবেষণায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৩,২৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ২৮.৩% শিক্ষার্থী শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।
পুরুষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭.৩৫% শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। গবেষণায় আরও দেখা যায়, ৭০.২% শিক্ষার্থী সমস্যাজনক পর্নোগ্রাফি ব্যবহারে জড়িত, ৬২.১% ইন্টারনেট আসক্তিতে ভুগছেন, এবং ৫০.৪% বিষণ্নতার লক্ষণ প্রকাশ করেছেন।
গবেষকরা মনে করেন, শৈশবে যৌন নিপীড়নের ইতিহাস, ইন্টারনেট আসক্তি ও পর্নোগ্রাফির অতিরিক্ত ব্যবহার—এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে শক্তিশালী পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে, যা বিষণ্নতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়।
বিশেষত, পুরুষদের শৈশবে যৌন নিপীড়নের অভিজ্ঞতা তাদের ইন্টারনেট ও পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে মানসিক শান্তি খোঁজার প্রবণতা তৈরি করে, যা শেষ পর্যন্ত আরও গভীর মানসিক সমস্যায় রূপ নেয়।
গবেষক দলের মতে, “শৈশবে যৌন নিপীড়নের অভিজ্ঞতা শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্রাজেডি নয়, এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও আচরণগত বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলে।
পুরুষ ভিকটিমদের জন্য সহায়তার পথ আরও উন্মুক্ত করা জরুরি।” গবেষণাটি শৈশবে যৌন নিপীড়ন নিয়ে সামাজিক সচেতনতা, মনো-সামাজিক সহায়তা, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরামর্শসেবা জোরদার করার আহ্বান জানায়।
পাশাপাশি, ইন্টারনেট ও পর্নোগ্রাফি ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা এবং বৈজ্ঞানিক মনস্তাত্ত্বিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়।