বুধবার, মার্চ ২৬, ২০ ২৫
আসহাবুজ্জামান শাওন, কমলগঞ্জ::
১০ ফেব্রুয়ারী ২০ ২৫
৮:৪৫ অপরাহ্ণ

নন্দরানী চা বাগান দখলে হাম.লা ও হ.ত্যা মামলার ১০ বছর এখনও আলোর মুখ দেখেনি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নন্দরানী চা বাগান। আওয়ামী শাসনামলে বাগানটি দখলে নেয়ার চেষ্টায় হামলা চালানো হলে চা বাগান কর্মকর্তাসহ ২ জনকে হত্যা করেছিল হামলাকারীরা।

তৎকালীন সময়ে বাগান কর্তৃপক্ষের পক্ষে মামলার বাদী শাহিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সাংসদ ও কৃষি মন্ত্রীর লোকজন এ হামলা চালিয়েছিল। সে হামলা ও অগ্নি সংযোগের কারণে চা বাগানের তৎকালীন সময়ে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছিল।

বিগত ২০১২ সালের ১০ ই ফেব্রুয়ারী সকালে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ৫ শতাধিক ভাড়াতে লোকের অংশগ্রহণে সাউথ এশিয়ান ইন্টারনেশনাল লিঃ মালিকানাধীন নন্দরানী চা বাগানে পূর্ব ঘোষিত ও পরিকল্পিত হামলা হয়েছিল।

জানা যায়, ঘটনার বেশ কয়েকদিন আগ থেকে মালিকানা দাবী করে জনৈক সাহাদাত রহিম চৌধুরী সাউথ এশিয়ান ইন্টারনেশনাল লিঃ এর মালিকানাধীন কমলগঞ্জের নন্দরানী চা বাগানের মালিকানা দাবী করে দখলের হুমকি দিয়েছিল।

সাহাদাত রহিম চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন মৌলভীবাজার -৪ আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ ও তার অনুসারী কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা।

এ হুমকিতে ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১২ সালে নন্দরানী চা বাগান কর্তৃপক্ষ কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন। তাছাড়া মালিক পক্ষ মুঠোফোনে তৎকালীন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ও সিলেটের ডিআইজিকে নিরাপত্তা চেয়ে সহায়তা চেয়েছিলেন।

পুলিশ কর্তৃপক্ষ নামমাত্র পুলিশ পাহাড়া দিয়ে ছিল সেদিন। পুলিশি সহায়তা চাওয়ার পরও পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারী সকালে নন্দরানী চা বাগানের কারখানাসহ ব্যবস্থাপকের বাংলোর চারদিক ঘিরে নেয় ৫ শতাধিক সশস্ত্র হামলাকারী। তাদের হাতে দেশীয় বিভিন্ন ধরণের অস্ত্রের সাথে বেশ কয়েকটি দু'নলা বন্দুকও ছিল।

এসময় নন্দরানী চা বাগান অফিসে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের কমলগঞ্জ -শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল আহাদ ও কমলগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি অমূল্য কুমার চৌধুরী। এরমাঝে দুপুরে হালকারীরা নন্দরানী চা বাগানের কার্যালয় এলাকায় প্রবেশ করে কুপিয়ে হত্যা করে সাউথ এশিয়ান ইন্টারনেশনাল লিঃ এর জিএম কাজী ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, এর আগে বাগান কর্তৃপক্ষ গুলিতে নিহত হয় হামলাকারীর পক্ষের মাধবপুর ইউনিয়ন এর ধলাইপাড় এলাকার জাহেদ মিয়া নামের এক যুবক। পরে হামলাকারীরা চা বাগানের গাড়ি ও অফিসে অগ্নি সংযোগ করে। ঘটনার খবর পেয়ে মৌলভীবাজার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আসলে হামলাকারীরা নিরাপদে সরে যায়। এ ঘটনায় মালিক পক্ষের শাহিরুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে সাহাদাত রহিম চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে হামলায় অংশগ্রহণকারী আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক আসামী করে হামলা ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে হামলাকারীর পক্ষের চা বাগান মালিক পক্ষকে আসামী করে পাল্টা মামলা দয়ের করেছিল। আওয়ামীলীগ সরকারের টানা ১৫ বছরের শাসন আমল থাকায় ঘটনার ১২ বছরেও এ মামলার কোন অগ্রগতি হয়নি।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে সাউথ এশিয়ান ইন্টারনেশনাল লিঃ এর চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এ প্রতিনিধিকে বলেন, হামলার নেপত্যে প্রধান শক্তি হিসেবে কাজ করেছিলেন আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ ও সাবেক কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ। তাঁর লক্ষ্য ছিল হামলা চালিয়ে নন্দরানী চা বাগান দখল করে তিনি এ চা বাগানের মালিক হবেন। তাই গত ১২ বছরে এ মামলার কোন অগ্রগতি হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এখন দুঃশাসন মুক্ত বাংলাদেশ। আশা করা যায় এখন মামলাটির বিচারকার্য অলোর মুখ দেখবে।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ