৬:১০ অপরাহ্ণ

অব'হে'লিত জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই: জাকির হোসাইন
সিলেট-৫ আসনে (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জাকির হোসাইন বলেছেন, সিলেট-৫ সংসদীয় আসন তথা জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা এখনও অব'হে'লিত এবং উন্নয়নবঞ্চিত। এই অঞ্চলের মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসেন। এই জনপদের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে আমার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট নগরের একটি রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের পক্ষে একনিষ্ঠভাবে ছিলেন, বিদেশে থেকে শেখ হাসিনার পতনের জন্য প্রবাসী ভাইবোনদের সংযুক্ত করেছেন ও মধ্যে প্রাচ্যে দেশের মানুষের কাছে শেখ হাসিনার নির্যাতনে কথা তুলে ধরেছেন। জাকির হোসাইনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভার খলাছড়া গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন জাকির।
জাকির হোসাইন রাজনীতি শুরু করেন সিলেট সরকারি কলেজে ছাত্রদলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে একাধিক মামলার আসামি হন। প্রবাসে গিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও রাজনীতি থেকে দূরে যাইনি। পরে তাকে আরবআমিরাত বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে পতিত সরকারের সময়ে নিজেদের ত্যাগ ও সরকারের রোষানলে পড়ার বর্ণনা দিয়ে জাকির বলেন, ২০১৮ সালে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা বিভিন্ন বক্তব্যে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন আমি নাকি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরকারের পতনের উদ্দেশ্যে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছি এবং ২০১৮ সালে আরব আমিরাতে সরকারি সফরে গিয়ে আমাকে দেশে ফিরেয়ে নিয়ে আনার জন্য আমিরাত সরকারকে প্রস্তাব দেন। কিন্তু আরব আমিরাত সরকার শেখ হাসিনার অভিযোগের কোনো সত্যতা না পেয়ে শেখ হাসিনার এমন ভিত্তিহীন প্রস্তাবকে নাকচ করে দেয়। তিনি বলেন, এর পর খুনি শেখ হাসিনা আমার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে অপপ্রচার শুরু করে যা আমাকে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। তবে আমি বিচলিত হইনি, কারণ আমি ন্যায়ের পক্ষে ছিলাম। জাকির হোসাইন বলেন, এই অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে আমাকে ‘জঙ্গি অর্থদাতা’ আখ্যায়িত করে আমার পাসপোর্ট নবায়ন বন্ধ করা হয়, দেশে ফেরার পথ বন্ধ করা হয়। এমনকি সামাজিকভাবে আমাকে হেয় করা হয়, দেশে আমার পরিবার আত্মীয়স্বজনরা চরম নির্যাতনের শিকার হন। যা আপানারা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন। শেখ হাসিনার ভিত্তিহীন মিথ্যা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত একটি অপচার, যার লক্ষ্য ছিল আমাকে সমাজ ও রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। জুলাই আন্দোলনেও সম্পৃক্ত ছিলেন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জাকির বলেন, বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলন শুরু হয় তখন আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আমিরাতে ১৩টি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় ছয় শতাধিক মিছিলকারীকে গ্রেপ্তার করে আরব আমিরাতের পুলিশ। প্রথমে ২ শতাধিক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ওই সময় গ্রেপ্তারের তালিকায় আরব আমিরাত যুবদলের সভাপতিসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ছিল। যেহেতু আমি আরব আমিরাত বিএনপির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি সেই হিসেবে আমাকে সব কিছু মোকাবেলা করতে হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমাদের জকিগঞ্জ-কানাইঘাট এলাকা হচ্ছে খনিজ সম্পদে পূর্ণ। ইতোমধ্যে জকিগঞ্জের একটি গ্যাসকূপের কাজ শুরু হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পেট্রোলিয়াম কোম্পানি জনাবী গ্রুপের সাথে একটি প্রাথমিক চুক্তি সই করেছি যেখানে বলা আছে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলে জনাবী গ্রুপ সিলেট তথা বাংলাদেশে তেল গ্যাস আহরণে বড় বিনিয়োগ করবে, ইনসাআল্লাহ আমাদের সফলতা আসবে। জকিগঞ্জ-কানাইঘাটবাসীর উন্নয়নে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উন্নয়নবঞ্চিত। বিশেষ করে সড়কগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। মানুষের কষ্টের শেষ নেই। আমি এই বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে মিটিং করেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্থ করেছেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। একইভাবে জকিগঞ্জের কাস্টমসের উন্নয়ন করে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি, দুই উপজেলার পর্যটন উন্নয়ন, খনিজসম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে তিনি প্রয়োজনীয় সব পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এলাকাবাসীর ভালোবাসা ও দলীয় মনোনয়ন পেলে আগামী দিনে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন জাকির হোসাইন।