বুধবার, মার্চ ২৬, ২০ ২৫
রেজওয়ান আহমদ::
২ ফেব্রুয়ারী ২০ ২৫
৫:১৫ অপরাহ্ণ

সমাজসেবায় ৪১ বছরে সুরমা বয়েজ ক্লাব: রেজওয়ান আহমদ

পুণ্যভূমি সিলেটে ১৯৮৪ সালের ১০ আগস্ট এক সুন্দর সকালে সিলেট নগরীর ৫ নং ওয়ার্ডের কলবাখানি এলাকায় দেশ,সমাজ ও মানব কল্যাণের জন্য কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে ‘সুরমা বয়েজ ক্লাব' প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি ক্লাবটি সিলেটবাসীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে 'সুরমা বয়েজ ক্লাব' একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাব হিসেবে ইতোমধ্যে সর্বমহলে সুপরিচিতি লাভ করেছে। শুরু থেকেই ৪টি অঙ্গীকার নিয়ে পথচলা শুরু করে ‘সুরমা বয়েজ ক্লাব'। অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে- ১. শিক্ষা ২. সংস্কৃতি ৩. ক্রীড়া ও ৪. সমাজসেবা। নিঃসন্দেহে বলা চলে ক্লাবের মহতি উদ্যোগের পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী, রক্তদান, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, আর্তমানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ, রমজান মাসে কোরআন শিক্ষা প্রশিক্ষণ, এসএসসি ও এইচএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে কোচিং ব্যবস্থা, এসএসসি ও এইচএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান।

সামাজিক কর্মকান্ডেও সুরমা বয়েজ ক্লাব এক ধাপ এগিয়ে। প্রতিবছরই আমিনুর রশীদ চৌধুরী বৃত্তি পরীক্ষা, মামুনুর রশীদ চৌধুরী ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, সিরাজ উদ্দিন আহমদ ফুটবল টুর্ণামেন্ট, ক্রীড়া সাংবাদিক টিপু মজুমদার ফুটবল টুর্ণামেন্ট চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও জাতীয় টিকা দিবসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিবছরই মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস, বুদ্ধিজীবী দিবস, বিশ্ব শিশু দিবস, জাতীয় যুব দিবস, বঙ্গবীর এম এ জি ওসমানীর জন্ম ও মৃত্যু দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে।

সমাজের কল্যাণে এমন কোন কার্যক্রম নেই, যেখানে সুরমা বয়েজ ক্লাব সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছে না। দেশ ও জাতির উন্নয়নে সুরমা বয়েজ ক্লাব নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সুরমা বয়েজ ক্লাব ৪০টি বছর পার করে ৪১তম বছরে পদার্পণ করেছে। ৪০ বছরের পথ চলায় অনেক প্রতিকূলতা, অনেক বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে আজ সুরমা বয়েজ ক্লাব পূর্ণ যৌবনে তার অংখ্য স্বেচ্ছাসেবীকর্মী বাহিনী নিয়ে সমাজ বির্নিমাণে এগিয়ে চলেছে সমাজ সেবার অঙ্গীকার নিয়ে। তৈরি করছে অসংখ্য আলোকিত মানুষ।

যাদের আলোক রশ্মিতে সমাজ থেকে যাদের অন্ধকারের আভা দূর হচ্ছে দিনের পর দিন। একদল মেধাবীর অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ সুরমা বয়েজ ক্লাব সমাজের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করেছে। আর এই অক্লান্ত অকুতভয় তরুণদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন একজন সাদা মনের মানুষ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ার হোসেন। এই মানুষটির দিনরাত পরিশ্রমের ফল স্বরূপ সুরমা বয়েজ ক্লাব আজ শুধু দেশেই নয়, এর রশ্মি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বাইরেও।

‘সুরমা বয়েজ ক্লাব' সমাজের অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে মহতি কাজ করে যাচ্ছে তা প্রশংসার দাবিদার। সুরমা বয়েজ ক্লাব প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের সকলের প্রিয় আনোয়ার হোসেন। এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে তাদের অবদান রয়েছে অপরিসীম। সুরমা বয়েজ ক্লাবের কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিরলস পরিশ্রম ত্যাগ নিঃস্বার্থে সেবা কার্যক্রমের মধ্যেদিয়ে সুরমা বয়েজ ক্লাব একটা আদর্শে অনুসরণীয় সমাজ কল্যাণমুখি প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।

এরকম ক্লাব পাড়া-মহল্লায় যত বেশি গড়ে উঠবে ততই সমাজ আলোর দিকে এগিয়ে যাবে। সিলেট বিভাগে সুরমা বয়েজ ক্লাব সামাজিক একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাব হিসেবে ইতিমধ্যে সর্বমহলে সুপরিচিতি লাভ করেছে। সুরমা বয়েজ ক্লাব প্রতিষ্ঠাতাবার্ষিকীতে গুণীজনদের সম্মাননা দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল-প্রবীণ জননেতা সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী, প্রবীণ আইনজীবী সাবেক পিপি মনির উদ্দীন আহমদ, সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, দৈনিক সিলেট বাণীর সম্পাদক জাহিরুল হক চৌধুরী, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট আফতাব চৌধুরী, প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতা, শিক্ষাবিদ শিবতোষ চক্রবর্তী।

সুরমা বয়েজ ক্লাবের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, দৈনিক সিলেটের ডাক এর নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল হামিদ মানিক, সাবেক মেয়র মরহুম বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লা শহিদুল ইসলাম, মোঃ ফয়জুল আনোয়ার (আলোয়ার), এডভোকেট মুজিবুর রহমান শাহিন, প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতা, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক দেওয়ান তৌফিক মজিদ লায়েক, বিশিষ্ট রাজনীবিদ মোঃ বদরুজ্জামান সেলিম, মাহি উদ্দিন সেলিম, হাজী মিলাদ আহমদ, শিক্ষাবিদ শিবতোষ চক্রবর্তী। অন্যদিকে, ক্লাবটিকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও ক্লাবের বিভিন্ন কার্যক্রমে কখনো অর্থ দিয়ে আবার কখনো মেধা দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে লালন ও পালন করে যাচ্ছেন সমাজের অতিপরিচিত একজন মানুষ ক্লাবের সাবেক সভাপতি আফজাল রশীদ চৌধুরী।

যার সহযোগিতা না পেলে সুরমা বয়েজ ক্লাবের এই ৪০ বছরের পথ চলা হয় থেমে যেতে পারতো। এই ক্লাবটিকে আরো সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ক্লাবের সভাপতি দিলওয়ার হোসাইন সজিব, সহ সভাপতি গোপাল বাহাদুর, যুগ্ম সম্পাদক রেজওয়ান আহমদ, সিনিয়র সদস্য আব্দুল আহাদ এলিছ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন আহমদ চৌধুরী মুন্না, গোলাম জাকারিয়া চৌধুরী শিপলু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম বাহাদুর, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক আরিফ আহমেদ, সদস্য কয়েছ আহমদ দারা, আব্দুল আহাদ সোহাগ, মাসুক আহমদ, সামিয়া আনোয়ার প্রমুখ।

সুরমা বয়েজ ক্লাব যেকোন কর্মসূচী গ্রহণ করলে সত ব্যস্ততার মধ্যেও সবাই কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করে। ক্লাবের সবছে কৃতিত্ব হল বিপুলসংখ্যক যুবক ও তরুণকে মহৎ কাজে ধরে রাখা। সুরমা বয়েজ ক্লাব দীর্ঘ ৪০ বছরের যাত্রাপথে সবচেয়ে বড় অর্জন টিলাগড়ে ক্যাটারিং প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট গড়ে উঠতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। সুরমা বয়েজ ক্লাবের মত আসুন আমরা সবাই মিলে সমাজ, দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাই । সিলেটবাসীকে মাদক, সন্ত্রাসমুক্ত একটি সুন্দর ও সুস্থ সমাজ উপহার দেই।

লেখক: যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরমা বয়েজ ক্লাব।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ