৬:৫৯ অপরাহ্ণ
জগন্নাথপুরে অস'ময়ে তরমুুজ চাষে বাম্পার ফলন
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অসময়ে তরমুজ চাষে বাম্পার ফলনে চারদিকে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এমনিতেই জগন্নাথপুরে আমন-বোরো ছাড়া অন্য কোন ফলনের চাষাবাদ তেমন একটা হয় না। হলেও তা একেবারেই নগন্য। তার উপর অসময়ে তরমুজ চাষ, তা ভাবা যায় না।
এতে প্রতীয়মান হয়, যে প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুরে ক্রমান্বয়ে মানুষ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। তার নেপথ্যে রয়েছেন, জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ ও তার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ। তারা মাঠে ময়দানে ঘুরেঘুরে ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে কৃষকদের নানাভাবে উৎসাহিত করেন। তাদের এমন আহবানে কৃষকেরাও সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসছেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ সরকারিভাবে সার-বীজসহ কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ফলে দিনেদিনে আবাদি জমির পরিমাণ বাড়ছে। এক সময়ের পতিত জমি আবাদের আওতায় আসছে।
এরকমই এক সফল কৃষকের নাম খলিল মিয়া। তিনি জগন্নাথপুর পৌর শহরের বলবল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পলিভরাট মইয়ার হাওরে এবার তরমুজ ও মিষ্টি লাউ চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। প্রতিদিন তার আবাদকৃত জমির ফলন দেখতে মানুষ মইয়ার হাওরে ছুটে যাচ্ছেন। মইয়ার হাওরের পলিমাটি যেন সবুজের সমারোহ হয়ে উঠেছে। তরমুজ ও লাউ বাগানে গাছে গাছে ফলন ধরেছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাওরে। কৃষক খলিল মিয়া জানান, গত বছর তিনি এখানে তরমুজ আবাদ করতে চেয়েছিলেন। শ্রমিক সংকটে তা পারেননি। এবার আগে থেকেই শ্রমিক এনেছেন।
আশ্বিন মাসের শুরুতে তিনি প্রায় ৬ কেদার জমিতে তরমুজ আবাদ করেন। পাশাপাশি সাড়ে ৭শ মিষ্টি লাউগাছ লাগান। প্রায় আড়াইমাস পর তরমুজ ফলন পাকতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে তিনি ৯৫ হাজার টাকার কালো তরমুজ বিক্রি করেছেন। ১৯ ডিসেম্বর শুক্রবার তিনি আরো ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেন। আগামীতেও আরো অনেক তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। তবে এ পর্যন্ত জমি আবাদে তার ব্যয় হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। তা তুলে তিনি অনেক লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি লাউগাছেও আশানুরূপ ফলন ধরেছে। এতেও লাভবান হবেন। এছাড়া তার বাগানে চাষ করা হয়েছে, সাদা তরমুজ। যা আগামী রমজান মাসে বাজারে আসবে।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, অসময়ে তরমুজ আবাদ করায় ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক খলিল মিয়া। ফলে তিনি লাভবান হচ্ছেন। তা দেখে অন্যান্য কৃষকেরাও এগিয়ে আসবেন বলে প্রত্যাশা করছি। এতে পতিত জমিগুলো আবাদের আওতায় আসবে। নতুন নতুন ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে জগন্নাথপুরের কৃষকেরাও কৃষি বিপ্লবে ভূমিকা রাখতে পারবেন। খলিল মিয়ার মতো কাঙ্খিত কৃষকেরা এগিয়ে আসলে জগন্নাথপুরের উৎপাদিত কৃষিপণ্য দেশের অন্যান্য স্থানে রপ্তানি করে আর্থিক লাভবান হওয়া সম্ভব। তা হলেই আমাদের কৃষি বিভাগের সকল চেষ্টা স্বার্থক হবে।