শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০ ২৪
অ্যাডভোকেট শাকী শাহ ফরিদী::
২৩ জুন ২০ ২১
৫:১০ পূর্বাহ্ণ

শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ: অ্যাডভোকেট শাকী শাহ ফরিদী
 স্বাধীন এই ভূখণ্ড-মানচিত্র-পতাকা-জাতীয় সংগীত প্রাপ্তিতে তথা স্বাধিকার আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতিটি স্থরে স্থরে যে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তার আরেক নাম ‘বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ’। সেই রোজ গার্ডেন থেকে সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, দীর্ঘ পথ পরিক্রমা ; জোয়ার-ভাটা, ঝড়-ঝাপটা, সুসময়-দু:সময়; সাফল্য-ব্যর্থতা, সবমিলিয়ে চলমান 'বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ’। জাতির জনক, স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, স্বাধীন বাংলাদেশ এর স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শ লালন করা উপমহাদেশের প্রাচীন, বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কালের বিবর্তনে আজ সুদৃঢ় অবস্থানে, সুন্দর আগামীর স্বপ্নে বিভোর আর তার সফল বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। জন্ম থেকে জ্বলতে থাকা নিপীড়িত এক জাতি, শোষন-শাসন আর অন্যায় অত্যাচারের বেড়াজালে বন্দি যাদের জীবন; নিজেদের অধিকার আদায়ের প্রতিটি ধাপে সংগ্রাম করে করে বেঁচে থাকা দিশেহারা এক জাতি, মাঝ দরিয়ায় প্রবল ঝড়ে আটকে থাকা নৌকার আশাহত যাত্রী, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-স্বাধীন ভূখন্ড-নিজস্ব পতাকা যাদের আজীবন লালিত স্বপ্ন; শুধু প্রয়োজন ছিল একটি কন্ঠস্বরের, বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তোলা একজন সাহসী বীরের; একজন দক্ষ নাবিকের যে এই হতাশায় নিমজ্জিত জাতিকে তীরে তোলে নতুন করে বাঁচতে শেখাবে। হ্যাঁ বলছি বাঙালী জাতির কথা, বলছি জাতির জনক বঙবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা- যার ৭ই মার্চের সেই ভাষন, অগ্নিকন্ঠে দেয়া স্বাধীনতার ঘোষনা; অসহায়-নির্যাতিত বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহবান, তার রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর প্রত্যক্ষ নেতৃত্ব- ফলশ্রুতিতে নয় মাসের যুদ্ধ এবং যুদ্ধশেষে বিশ্বের বুকে নতুন মানচিত্র "বাংলাদেশ", আমার বাংলাদেশ- আমাদের বাংলাদেশ। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশ পেতামনা- 'বাংলাদেশী' বলে পরিচয় দিতে পারতাম না। মতের অমিল থাকুক, পথের ভিন্নতা থাকুক, এমনকি রাজনীতির হরেক কৌশলও বিদ্যমান থাকুক, তবুও জাতির পিতা নিয়ে কোন হীনমন্যতা যেন এই ভূখণ্ডে আর না থাকে আর ইতিহাসের বীরত্বে যার যতটুকু ব্যক্তিগত বা সাংগঠনিক অবদান- তা যেন সেই অনুপাতেই স্বীকার করা বা মেনে নেয়া হয়। শক্ত ভিত্তির উপর ভর করে একটি আকাশচুম্বী বহুতল ভবন যেমন মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, ঠিক তেমনি বহু নেতা-কর্মীর আর সাধারণ জনগনের ভালোবাসায়-সমর্থনে বিশাল অট্রালিকাসম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ-এর ভিত্তি আর ভরসা দলীয় বর্তমান সভাপতি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাকে মাঝখানে রেখেই আবর্তিত হচ্ছে দলীয় রাজনীতির যাবতীয় কলা-কৌশল। অভিজ্ঞতায়, সাহসে, দক্ষতায় আর সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারা শেখ হাসিনার বিকল্প কালের বিবেচনায় দলে আসলে ধারেকাছেও নেই আর কেউ। শেখ হাসিনাকেই তাই বটবৃক্ষ হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে তার ছায়াতলে আগলে রাখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনার নিরলস কাজের মাধ্যমে এদেশের আপামর জনতার আস্থা, ভালোবাসা আর বিশ্বাসের জায়গাটা দখল করে নিয়েছেন নীরবে। নেতৃত্বগুণ, বিচক্ষণতা, সময়োপযোগী সাহসী আর সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারার ক্ষমতা, কঠোর পরিশ্রম, স্বপ্ন দেখা আর তার বাস্তবায়নে দিনরাত কাজ করা- ইত্যাদি গুণগুলো কালের বিবেচনায় শেখ হাসিনাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। ছোটবেলা দেখতাম বড় বড় তারকা প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্বনেতাদের সাথে পরিচিত হবার আর বাংলাদেশ সফর করার আমন্ত্রণ জানানোর জন্যে সুযোগ খোজতেন আমাদের শীর্ষস্থানীয়রা আর বদনাম ছিল আমরা সুযোগ পেলেই বিদেশী সাহায্যের জন্যে হাত পাতি। আর আজ? অনেক বিশ্বনেতাকেই দেখি শতশত তারকা নেতাদের ভীড়েও খোজে বের করে হাত মেলান আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও আহ্বান জানান- সাহায্য নয় আসুন বিনিয়োগ করুন আমাদের দেশে, বড় গলায় বলতে পারেন আমার দেশের ষোল কোটি মানুষ দুবেলা দুমুঠো খেতে পারলে ইনশাআল্লাহ আশ্রিত দশ লক্ষ রোহিঙ্গাদেরও আমরা খাওয়াতে পারব ভালোমতই। একজন শেখ হাসিনাই আগলে রেখে চলেছেন প্রিয় এই দেশটাকে, হাজারো শকুনের ভয়াল থাবা থেকে। দাত থাকতে দাতের মর্যাদা না বুঝার বদনাম আমাদের পুরনো- তা ব্যক্তি, দল কিংবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়েই হোক, হয়তো যেদিন শেখ হাসিনা থাকবেননা সেদিন অনুভূত হবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কিংবা এই দেশের জন্যে একজন দলনায়ক এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কতটুকু প্রয়োজন ছিল। বদনাম ঘুচানোর মোক্ষম সময় হয়তো এটি। দলের নাম ভাঙিয়ে খাওয়া টাউট-বাটপারদের দল থেকে বিতারিত করতে হবে, তরুনদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তারপর রাজনীতিতে আনতে হবে, তরুণ প্রজন্মের রাজনীতি বিমুখ অংশকে রাজনীতিতে আনার জন্যে ডায়নামিক কিছু শিক্ষিত স্মার্ট ছেলেমেয়েকে সামনে আনতে হবে যাদেরকে দেখে নবপ্রজন্ম রাজনীতিতে তাদের আইডল বা আইকন খোঁজে পাবে, অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন করা ছেলেমেয়েদেরকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে হবে, নেতাকর্মীদেরকে দলীয় এবং দেশের সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্যে উপযুক্ত বিজ্ঞ মানুষ দ্বারা সভা সেমিনার সিম্পোজিয়াম ট্রেনিং ইত্যাদি করাতে হবে, দলের নিবেদিতপ্রাণ ছেলেমেয়েদের মধ্যে মেধাবীদেরকে দলের ফান্ড থেকে স্কলারশিপ দিয়ে ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় বা বিদেশে পড়াশোনা করাতে হবে, সাময়িক ফটোসেশনের রাজনীতি নয় বরং করাতে হবে দীর্ঘমেয়াদি আদর্শিক রাজনীতি, শুধু শুধু দলের সকল কিছুতেই অন্ধ প্রশংসা নয় বরং ক্ষেত্রমত করতে হবে দলের অভ্যন্তরে গঠনমূলক সমালোচনা, নেতাও মানুষ নেতাও ভূল করতে পারেন তাই সারাক্ষণ অন্ধ তেলবাজিতে না ডুবে ক্ষেত্রমত নেতার ভুল ধরিয়ে দিতে হবে চুপিসারে এবং নিজের নেতাকে বানাতে হবে আরো আধুনিক এবং যুগোপযোগী, নেতাদেরকেও এসব ব্যাপারে আরো নমনীয় এবং যুগোপযোগী হতে হবে, খালি নিজের কাজে কর্মীদেরকে ব্যবহার না করে তাদের জীবন-জীবিকার একটা সুষ্ঠু উপায় বের করে দিয়ে বাকিটা সময় করাতে হবে বিশুদ্ধ রাজনীতি, সর্বোপরি মনে লালন করতে হবে দেশপ্রেম এবং ভালো কিছু করার স্বপ্ন- সে অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করে এগিয়ে যেতে হবে আগামীর সোনার বাংলা গড়ার তাগিদে। প্রবীণ এবং তৃণমুল সম্মানিত নেতাদের অভিজ্ঞতা-ত্যাগ-মেধা-বিচক্ষনতা-কারিশমাটিক লিডারশীপ সমস্তের মিশ্রণে এগিয়ে চলুক আগামীর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। পাশাপাশি তরুন নেতাদের নিয়ে আসা হউক সামনে, কারন তরুনরাই পারে পাল্টে দিতে ; সুন্দর আগামী গড়তে। কিছুকাল আগে উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নিজস্ব ভবনে দলীয় কার্যালয় হয়ে উঠুক আপামর জনতার আশা ভরসার প্রতীক, সাধুবাদ রইল। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলের আরো বেশি ভালোলাগা,ভালোবাসা আর আস্থা কুড়ানোই হউক মাঠি ও মানুষের দল, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক সংগঠন "বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ" এর হালের মিশন আর দেশকে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত করে উন্নত-সমৃদ্ধ এক নতুন বাংলাদেশ গড়াই হউক দেশের প্রাচীনতম এই দলের ভিশন। শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ হউক অনুভূতির আরেক নাম। লেখক : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ