শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০ ২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক::
১৬ অক্টোবর ২০ ২২
৭:৫০ অপরাহ্ণ

ইরানের কুখ্যাত ইভিন কারাগারে আগুন, গোলাগুলি চলছে

ইরানের কুখ্যাত ইভিন কারাগারে আগুন লেগেছে। সেই সঙ্গে কারাগারের ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দও শোনা যাচ্ছে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কারাগার থেকে আগুন আর ধোঁয়া উড়ছে। সেই সঙ্গে ভিডিওতে বন্দুকের গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।

রাজনৈতিক বন্দী, সাংবাদিক ও বিদেশি নাগরিকদের আটকে রাখার কারণে তেহরানে এই কারাগারের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে ভিডিও ফুটেজ দেখে মনে হচ্ছে, আগুন এখনো জ্বলছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কারাগারের বাইরে থেকে বিভিন্ন বস্তু ভেতরে ছুঁড়ে মারা হচ্ছে, এরপর বিস্ফোরণ ঘটছে।

কারাগারে আগুনের বিষয়ে বিবিসি পার্সিয়ান বিভাগের সাংবাদিক রানা রাহিমপুর বলছেন, কারাগারের ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রতিক বিক্ষোভকারীদের কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের সম্পৃক্ততা থাকতেও পারে, কারণ শত শত বিক্ষোভকারীকে এই কারাগারে পাঠানো হয়েছে, বলছেন রানা রাহিমপুর। ইরানে গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। গত মাসে বাইশ বছর বয়সী কুর্দিশ ইরানিয়ান মাহসা আমিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়ার পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কর্মকর্তাদের দাবি, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন।

কিন্তু মাহসা আমিনির পরিবারের দাবি, তিনি সুস্থ ছিলেন, নৈতিক পুলিশের পিটুনিতে তার মৃত্যু হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, বিক্ষোভের সঙ্গে কারাগারে আগুনের ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই, বরং এর পেছনে অপরাধীরা রয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, সাধারণ অপরাধীরা এই দাঙ্গা ঘটিয়েছে, রাজনৈতিক বন্দীরা এর সঙ্গে জড়িত নয়।

তবে ইরাকের সরকারবিরোধী পর্যবেক্ষক গ্রুপ ১৫০০তাসভিরের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে কারাগারের ভেতর থেকে 'স্বৈরাচার নিপাত যাক' শ্লোগান শোনা যাচ্ছে- যে শ্লোগান সাম্প্রতিক বিক্ষোভকারীরা নিয়মিত ব্যবহার করছেন। কারাগারের ভেতর থেকে ইরানের সরকারি টেলিভিশনকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তেহরানের গভর্নর দাবি করেছেন, ছোটখাটো অপরাধীদের একটি দল এই দাঙ্গা শুরু করেছে, তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে সেখানে আসলে কি পরিস্থিতি রয়েছে, তা নিয়ে বিভ্রান্ত রয়েছে বলে বলছেন বিবিসি পার্সিয়ানের সাংবাদিক কাসরা নাজি।

কারণ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কারাগারে এখনো আগুন জ্বলছে এবং গোলাগুলির শব্দ আসছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কারাগারের যে অংশে রাজনৈতিক বন্দীদের রাখা হয় এবং বিক্ষোভের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের যে অংশে পাঠানো হয়েছে, তার ছাদের ওপর কারাবন্দীরা বসে রয়েছেন।

কয়েকজন কারাবন্দীর পরিবার জানিয়েছে, অন্য সময়ে পারলেও তারা তাদের স্বজনদের সঙ্গে এখন টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না। কারাগারের আশেপাশের ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারাগার অভিমুখী সবগুলো সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর আগে ভিডিওতে দেখা গেছে, কারাগারের ভেতরে পুলিশ প্রবেশ করছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কারাগারে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতেও দেখা গেছে। সূত্র: বিবিসি।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ