বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০ ২৪
তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি::
১৯ মে ২০ ২৩
৮:৫৫ অপরাহ্ণ

তিতাসে নদী খননের নামে বালু-মাটি বিক্রির মহোৎসব

কুমিল্লার তিতাসে নদী খননের অজুহাতে কোটি টাকার বালু ও মাটি বিক্রির মিশনের নেমেছেন এমন অভিযোগ স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।নদীর বালু-মাটি দিয়ে দুইপাশের বাঁধসহ রাস্তার নির্মাণের নির্দেশ থাকলেও মানা হচ্ছে না কোথাও।

প্রতি শতাংশ চল্লিশ হাজার টাকায় চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন জনের পুকুর ভরাটসহ বিভিন্ন যায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে এই বালু/মাটি।অপরিকল্পতি বালু-মাটি উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে এমন অভিযোগ উঠে এসেছে।

অভিযুক্ত এই সিন্ডিকেট শক্তিশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রানভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।নদীপথ সচল করতে ২০২০ অর্থবছরে তিতাস উপজেলার প্রায় ৪৫ কিলোমিটার তিতাস নদীসহ,খাল খনন ও ব্রিজের গোড়ায় ব্লক বিছানোর জন্য অনুমোদন দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এজন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা।গত বছর তিতাস নদী খননের কাজ শেষ না হওয়া এবার খননের পেয়েছে রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং ও নিয়াজ ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজে কাজ না করে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু নেতাকে সাব-ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে খনন চালিয়ে যাচ্ছে।ফলে উপজেলা জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের গোপালপুর অংশে তিতাস নদী খনন প্রকল্প পুঁজি করে তাদের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট বালু ও মাটি লুটে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত এক নেতা জানান,আমাদের সাইডে এসে প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করছেন (পাউবোর)এসও কামাল হোসেন।তার সাথে আমাদের যোগাযোগ নিয়মিত রয়েছে।

আমরা তাদের কাছ থেকে সাড়ে তিন টাকা করে মাটি ক্রয় করে স্থানীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করছি।

তবে এলাকার কিছু বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি জানান, প্রায় চল্লিশ হাজার টাকায় চুক্তির বিনিময়ে প্রতি শতাংশ ভরাট করছে এই সিন্ডিকেট। তাছাড় চুক্তিভিত্তিক বালু ক্রয়কারী চেংগাতলী গ্রামের কামাল হোসেন জানান,আমি তাদের কাছ থেকে বালু ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গোপালপুর অংশে তিতাস নদীর দুটি স্থানে কাটার ড্রেজার বসানো হলেও নদী খননের কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।

শুধু মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে সাব-ঠিকাদারি নেওয়া নয়,এদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর কাছ থেকে বিস্তর অভিযোগ উঠে এসেছে।

নদী ভরাট হয়ে প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে এমন স্থান খনন না করে যেখানে নদী সচল রয়েছে সেখানে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ভুক্তভোগীরও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে উপজেলার কড়িকান্দি ইউনিয়নের একলারামপুর এলাকার অংশের নদীর বালু-মাটি উত্তোলন করে একলারামপুর এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে বালু-মাটি বিক্রি করে নিজেদের পকেটে ভারি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে এমন অভিযোগ উঠেছে একটি সেন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে কুমিল্লা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালী উজ্জামান বলেন, কে বা কারা মাটি বিক্রি করছে তা আমার দেখার বিষয় না, আমি দেখবো মাটি বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে যাচ্ছে কিনা। যেহেতু এটা সরকারি মাটি যেখানেই রাখা হউক, সে মাটি উপজেলায় গঠনকৃত কমিটির মাধ্যমে বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হবে।

আর টাকা লেনদেনের ব্যাপারে আমাদের অফিসের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।এ বিষয়ে তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম মোর্শেদে বলেন, যদি কোন ব্যক্তি নদী খননের নাম করে নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন কিংবা মাটি বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ