বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১০ , ২০ ২৪
স্টাফ রিপোর্ট:
৯ সেপ্টেম্বর ২০ ২৪
৭:৪৫ অপরাহ্ণ

কানাইঘাটে প্রবাসী শাকুর সিদ্দিকীর প্রতারণায় মৎস খামারির কোটি টাকার ক্ষতি

কানাইঘাটে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এম এ শাকুর সিদ্দিকী চৌধুরীর প্রতারণার শিকার হয়েছেন একজন মৎস খামারি। এ কারণে তিনি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এখন ক্ষতিপূরণ চাওয়ায় উল্টো হত্যার হুমকি পাচ্ছেন তিনি।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন উপজেলার নিজ বাউরভাগ পশ্চিম গ্রামের আহসান উল্লার ছেলে জুনেদ আহমদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কানাইঘাটের ভূমি প্রতারক এমএ শাকুর সিদ্দিকী চৌধুরীর প্রতারণার শিকার হয়েছি।

এতে আমার বিনিয়োগকৃত প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। টাকা ফেরত চাইলে শাকুর সিদ্দিকী চৌধুরী আমাকে হুমকি দিচ্ছেন।’ এ ঘটনায় গত রবিবার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান এই উদ্যোক্তা।

জুনেদ আহমদ বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল আমি একটি মৎস্য খামার গড়ে তুলব। আমার আগ্রহের খবর পেয়ে একই উপজেলার নিজ বাউরভাগ পশ্চিম গ্রামের শওকত আলী চৌধুরী ওরফে আজির উদ্দিনের ছেলে এম.এ শাকুর সিদ্দিকি চৌধুরী (শুকুর) আমাকে মৎস্য খামার গড়ার প্রস্তাব দেন।

শাকুর সিদ্দিকী জানান- কানাইঘাট উপজেলার উন্দ্রকান্দি উত্তর মৌজার সিট নং-১ এর ১২২,১৫,১১৪, নম্বর দাগে তার পিতা শওকত আলীর নামে ৩৩ বিঘা জমি রয়েছে।

সেখানে শওকত আলী নগর নামের একটি সাইনবোর্ডও ছিল। তার এই জমিতে ফিশারি করার প্রস্তাব দেন।’ ক্ষতিগ্রস্ত এই উদ্যোক্তা জানান, শাকুর সিদ্দিকীর প্রস্তাবে বিশ বছরের চুক্তি করে দশ বছর মেয়াদে ফিশারি করতে জমি ভাড়া নেন তিনি।

এ বিষয়ে একটি চুক্তি করা হয়। শাকুর সিদ্দিকী লন্ডনে থাকায় তার লোকজন দখল বুঝিয়ে দেন। এর ভিত্তিতে আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ করার জন্য মাটি কেটে ‘শওকত আলী নগর ফিসারিজ এন্ড এগ্রো ফার্ম লিঃ’ প্রকল্পটি গড়ে তোলেন তিনি।

জুনেদ আহমদ বলেন, ‘আমি প্রায় কোটি টাকা বিনয়োগ করে খামার কার্যক্রম শুরু করি। পুরোদমে মৎস উৎপাদন শুরু হওয়ার পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কানাইঘাট উপজেলার ৭ নম্বর দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের কায়স্থগ্রামের মৃত হাজী আব্দুল জলিলের সন্তানরা পুলিশ নিয়ে ফিশারিতে হাজির হন এবং জমির মালিক দাবি করেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি শাকুর সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফিশারি ছেড়ে যেতে নিষেধ করেন।

এদিকে, আব্দুল জলিলের মেয়ে জাহিদা ইয়াসমিন বাদী হয়ে আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেন। মামলার নথিপত্র সংগ্রহ করে বিষয়টি পরিষ্কার হয়- প্রতরণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে শাকুর সিদ্দিকী জমি নিজের দাবি করে সেই জমি আমার আমাকে ভাড়া দেন।’

প্রতারণার বিয়ষটি জানতে পেরে ক্ষতিপূরণ চাওয়ায় শাকুর সিদ্দিকী প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন খামারি জুনেদ। তিনি বলেন, ‘আব্দুল জলিলের সন্তানেরা মৎস্য খামারের জমি আইনিভাবে দখল বুঝে নিয়েছেন। মৎস্য খামারে বিনিয়োগ করে আমার প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এ ঘটনার পর আমি শাকুর সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত চাই। কিন্তু তিনি টাকা না দিয়ে উল্টো আমাকে নানা হুমকি দিচ্ছেন।’ জুনেদ আহমদ বলেন, ‘এমএ শাকুর সিদ্দিকী চৌধুরী একজন বহুরূপী প্রতারক। তিনি বিগত দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি পোস্ট দিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা দাবি করেছেন। সরকার পতনের পর থেকে নিজের পরিচয় পাল্টে ফেলেন।

ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডি দেখলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।’ ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উল্টো হত্যার হুমকি দেওয়ায় জুনেদ আহমদ কানাইঘাট থানায় একটি জিডি করেছেন।

গতকাল রবিবার প্রতারণার ঘটনায় আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেছেন। তিনি শাকুর সিদ্দিকীর প্রতারণার বিষয়ে পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ