১১:১১ অপরাহ্ণ

কুলাউড়ায় সাজানো ডাকাতির মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর অভিযোগ
ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলনে জামিনদারের জন্য ব্যাংকের কথা বলে এক নিরীহ মহিলাকে ফুসলিয়ে কুলাউড়া শহরে নিয়ে দলিলে টিপসই গ্রহণ করে প্রতারণার মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে প্রতারক চক্র প্রতিপক্ষকে ফেন্সিডিল দিয়ে ফাঁসাতে ব্যর্থ হয়ে সাজানো ডাকাতির মামলা দায়ের করেছে।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় কমলগঞ্জের শমশেরনগরস্থ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমরা একই এলাকার এবং প্রতিপক্ষ লিয়াকত আলী আমার মামাতো ভাই ও মুক্তিযোদ্ধা আমির আলী ইয়ামিছের সন্তান হওয়ার সুযোগে আমার সহজ সরল নিরীহ মায়ের জমি দখলের পায়তারায় লিপ্ত ছিল।
লিয়াকত আলী ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলণের জন্য জামিনদারের কথা বলে আমার মা আছিরা বেগমকে ফুসলিয়ে কুলাউড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে পূর্বে সে দলিল তৈরি করে রাখে। লেখাপড়া না জানার সুযোগে আমার মাকে সুকৌশলে কুলাউড়ায় নিয়ে লিয়াকত গ্রাম্য মুহুরীর মাধ্যমে একজন দলিল লিখকের কাছে গিয়ে দলিলে টিপসই নিয়ে নেয়।
কয়েকটি দাগে প্রায় ৪০ শতক জায়গা তার নামে রেজিষ্ট্রিও করে নেয়। তার প্রতারণামূলক কার্যক্রম জানাজানি হলে আমরা এলাকার গণমান্যব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দকে বিষয়টি অবগত করি। লিয়াকত আলী মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ে নিজেকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই এলাকার কারো কোন কথায় কর্ণপাত করেননি।
এক পর্যায়ে অতি সুকৌশলে আমাদেরকে ঘায়েল করতে নাটক সাজাতে থাকে। আব্দুল কুদ্দুস আরো বলেন, গত ৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় ফেনসিডিল দিয়ে নাটক সাজিয়ে আমাদেরকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চালায়। এরপর সে গত ৭ নভেম্বর কুলাউড়া থানায় আমরা ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
তার নাটকের বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ও প্রশাসনের মধ্যে প্রকাশ হলে আবারো ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে ৪টায় একইভাবে তার নিজের ঘরে একটি ডাকাতির ঘটনা সাজায়। পরদিন ৮ নভেম্বর সাজানো ডাকাতির ঘটনা লোকমুখে ও ফেসবুকে প্রচার করে আমাদেরকে আসামী করে কুলাউড়া থানায় ডাকাতির লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশি তদন্তকালে বিষয়টি লিয়াকত ও তার সহযোগিদের প্রতারনা ও সাজানো ঘটনা প্রকাশ পায়।
লিয়াকতের প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র চক্রান্তের বিরুদ্ধে গত ১৫ নভেম্বর আমার মামা আছকর আলী বাদি হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এভাবে একের পর এক প্রতারণা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আমাদের হয়রানি করতে সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর লিয়াকত বাদি হয়ে আমার বড় ভাই মুখজ্জিল মিয়া ও অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মৌলভীবাজারে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। তার মিথ্যা-বানোয়াট মামলার সংবাদ পেয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
লিয়াকতের প্রতারণা ও সাজানো ডাকাতি ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী আহমদ আলী, শরীফ উদ্দীন এবং এলকাবাসীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মান উল্ল্যাহ, গ্রামের মুরুব্বি আছকর আলী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাসুক মিয়া, আব্দুল খালিক, উম্মর আলী, মায়া মিয়া, মনির মিয়া, আরজু মিয়া প্রমুখ।
তবে অভিযোগ বিষয়ে লিয়াকত আলী বলেন, আদালতে দায়েরকৃত মামলার ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য। এখন প্রতিপক্ষরা বাঁচার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছে এবং আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, ঘটনার দিন খবর পেয়ে রাতে পুলিশ বাড়িতে গিয়ে ডাকাতি হওয়ার বিষয়ে কোন সত্যতা পায়নি। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি পরিকল্পিত ও সাজানো বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত পূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।