মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০ , ২০ ২৪
স্টাফ রিপোর্টার::
১৭ এপ্রিল ২০ ২৪
৭:৪২ অপরাহ্ণ

প্রভাবিত হয়ে জাউয়া বাজার ইজারা দেয়ার পাঁয়তারা করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

উচ্চআদালতের স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা আদেশ অমান্য করে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার কম মূল্যে ইজারা নেওয়ার পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে।

এমন কি ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না প্রভাবিত হয়ে বেআইনিভাবে কথিত ইজারাদার দাবিদার জাহাঙ্গীর আলম চক্রকে ইজারা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এতে বাজারের ইজারাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার জাউয়া ইউনিয়নের জাউয়া গ্রামের অধিবাসী শফিক উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ আজির উদ্দিন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমি বিগত ১৪২৯ সনে ২ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার ৬৫০ টাকা মূল্যে জাউয়া বাজারের ইজারা লাভ করি। পরবর্তী বছর কৈতক গ্রামের নুর উদ্দিনের পুত্র ফাহিম আহমদ ১৪৩০ সনে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যে জাউয়া বাজারের ইজারা গ্রহীতা হন।

কিন্তু চলতি বছর ১৪৩১ সনে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে বাজারের ইজারা দরপত্র প্রকাশ করা হয়। গোপনীয়তা অবলম্বন করে ইজারা বিজ্ঞপ্তির প্রসার-প্রচারণা না করে এবং স্থানীয় অধিবাসীগণকে জানার সুযোগ না দিয়ে রাতারাতি গত ১৫ ফেব্রুয়ারী দরপত্রের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

গোপন আঁতাত করে সাজানো একটি ইজারা নাটকের মাধ্যমে দেবের গাওঁয়ের অধিবাসী জাহাঙ্গীর আলমকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্যে বাজারের ইজারা দেওয়ার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।” আজির উদ্দিন আরো বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে আমি গত ১৯ ফেব্রুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে পুণঃদরপত্র আহবানের আবেদন করি।

আমার আবেদন কর্তৃপক্ষ আমলে না নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে বাজারের ইজারা প্রদান করার ঘোষণা দেন। ফলে হাটবাজার ইজারা নীতিমালা ২০১১ অমান্য করে জাউয়া বাজার ইজারা দেওয়ার অভিযোগ এনে আমি মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন (নং ৩৩২০/২০২৪ দায়ের করি।

বিচারপতি কে.এম কামরুল কাদের ও খিজির হায়াৎ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারী করে আদেশ প্রদান করেন এবং ১৪৩১ সনে জাউয়া বাজার ইজারা দরপত্রের অধীনে ইজারা প্রদানের প্রক্রিয়া ৩ মাসের স্থগিতের আদেশ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আজির উদ্দিন জানান, উক্ত আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে জাহাঙ্গীর আলম নিজেকে ১৪৩১ সনের ইজারাদার দাবি করে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে সি এম পি (নং ২৯৮/২০২৪) আপীল দারেয় করেন।

জাহাঙ্গীর আলমের আপীলের প্রাথমিক শুনানী শেষে মাননীয় চেম্বার আদালত গত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত জাউয়া বাজারের ইজারা কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ জারী করেন। আদালতের এই স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা আদেশের পর জাহাঙ্গীর আলমের নামে বাজারের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত রাখতে আমি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করি।

কিন্তু আমার আবেদন ছাতক উপজেলা প্রশাসন আমলে না নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে ইজারাদার ঘোষণা করতে অনড় রয়েছেন। এমন কি জাউয়া বাজারের বর্তমান ইজারাদার হিসেবে ফাহিম আহমদ জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা প্রশাসনের নিকট বাজারের ইজারা মাশুল চলমান রাখতে আদালতের দেওয়া স্থিতাবস্থা সময়ের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাসকালেকশনের সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানান।

সেই আবেদনও উপজেলা প্রশাসন কার্যকর করেন নি। বরং মহামান্য আদালতের আদেশ আমান্য করে কম মূল্যে জাহাঙ্গীর আলমকে ইজারা দেওয়ার সকল বন্দোবস্ত করেছেন ছাতকের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।” ছাতক উপজেলা প্রশাসনের আস্কারা পেয়ে আদলতের রায় আমান্য করে জাহাঙ্গীর আলম বাজারের ইজারা অবৈধভাবে নিলে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলার অবনতি এবং দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টির জোর আশঙ্কা রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে আজির উদ্দিন অভিযোগ করেন।

বিষয়টি তিনি ইতোমধ্যে ছাতকের পুলিশ প্রশানকে লিখিত ভাবে অবহিত করেছেন বলেও জানান। মহামান্য উচ্চ আদালতের আদশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে অবৈধ ইজারাদার দাবিদার জাহাঙ্গীর আলমকে জাউয়া বাজারের ইজারা কার্যক্রমের কোনো সুযোগ না দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আজির উদ্দিন অনুরোধ জানিয়েছেন।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ