৭:৩৯ অপরাহ্ণ

ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি, প্রতারণা, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন বালাগঞ্জ উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজু আহমদ লুলু।
এ সময় তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সভার কার্যবিবরণীতে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার কারনে ইমরান আহমদ সরকারী মহিলা কলেজ-এর অধ্যক্ষপদে এনামুল হক সরদার এর নিয়োগ বৈধ হয় নাই।
অথচ এনামুল হক সরদার অধ্যক্ষপদ দখল করে ইমরান আহমদ সরকারী মহিলা কলেজ পরিচালনা করে আসছেন এবং অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকারের বেতন-ভাতাসহ সকল প্রকার সুবিধা ভোগ করে আসছেন। লিখিত বক্তব্যে লুলু অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা এনামুল হক সরদার প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের ওপর প্রভাব বিস্তার করে ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দেখিয়ে প্রভাষক থেকে অধ্যক্ষ হিসাবে অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করে এমপিওভূক্ত হন। মাসে ২/৩ দিন কলেজে উপস্থিত থেকে বেতন উত্তোলন করে নিচ্ছেন।
তাছাড়া তার স্বাক্ষরে বিভিন্ন একাউন্ট থেকে জাল বিল ভাউচার তৈরি করে যাতায়াত বিল ও ঢাকা যাওয়া আসা খরচের বিল উত্তোলন করে নিচ্ছেন।
এমনকি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে উচ্চহারে ভর্তি ফি বেতনসহ অন্যান্য অর্থ আদায় করে কলেজ ফান্ডে জমা না রেখে নিজে ইচ্ছামত খরচ করে চলেছেন। লুলু আরো অভিযোগ করেন কলেজটি সরকারীকরণের পর কলেজের ফাইল মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপিত হলে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা না থাকায় অধ্যক্ষপদ থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয় এবং কলেজের অধ্যক্ষপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
কিন্তু এরপরও তিনি অধ্যক্ষ পদবী ব্যবহার করে কলেজ থেকে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। এতে এলাকার জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। লুলু বলেন, এমতাবস্থায় এনামুল হক সরদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্বসাৎ, জালিয়াতি, প্রতারনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়ে গত ২ আগষ্ট সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষামন্ত্রণালয় বরাবরে লিখিত অভিযোগ জানান।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৪ আগষ্ট মন্ত্রনালয় হতে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জনানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লুলু বলেন, কিন্তু অদৃশ্য কারনে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় নাই। গত ১১ সেপ্টেম্বর ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন অধিদপ্তর বরাবরে দাখিলের জন্য নির্দশক্রমে অনুরোধ করা হয়। লিখিত বক্তব্যে লুলু আরো অভিযোগ করেন এনামুল হক সরদার ভুয়া এমএস ফাউন্ডেশন নামে কোম্পানীর পুরো ৫ নং টাওয়ার ভাড়াচুক্তির মাধ্যমে নিজ দখলে নিয়ে শাহজালাল সিটি কলেজ পরিচালনা এবং গার্ডেন হেলথ্ ক্লাব পরিচালনা করে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হোষ্টেল সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধার কথা বলে উচ্চহারে ভর্তি ফি ও চাঁদা আদায় করে নিজে পকটস্থ করছেন। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মানসম্মত শিক্ষা ও হোষ্টেল সুবিধা দিচ্ছেন না।
কোম্পানীর পাওনা বিল ভাড়া পরিশোধ না করায় কোম্পানীর পক্ষ থেকে এনামুল হক সরদারের বিরুদ্ধে বর্তমানে আদালতে টাকা আদায়ের মামলা, প্রতারণার মামলা ও ভাড়াচুক্তির মেয়াদ শেষ হলে উচ্ছেদ মামলাসহ মোট ৩টি মামলা চলমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এনামুল হককে অপসারণ করে যোগ্যতা সম্পন্ন অধ্যক্ষ নিয়োগ করতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।