৯:২৫ অপরাহ্ণ
স্মৃতিচারণ:
হযরত শাহজালাল (রহ:) মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের উপর গ্রেনেড হামলায় আহত হওয়ার ঘটনা
মো: মুহিবুর রহমান:: স্মৃতি মানুষকে ভাবিয়ে তোলে। স্মৃতি মানুষকে সুখ দেয় এবং দুঃখও দেয়। তেমনি এক স্মৃতি নিয়ে আমি বেঁচে আছি। ২০০৪ সালের ২১ মে শুক্রবার হযরত শাহজালাল (রহ:) এর মাজার জিয়ারতে আসেন তৎকালীন বৃটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী।
এ সময় তিনি সহ আমরা অনেকেই গ্রেনেড হামলার শিকার হই। গ্রেনেড হামলার ঘটনাটি আজও ভুলতে পারিনি। ঘটনাটি আমাকে বার বার পীড়া দেয়। এ ভয়াবহ ঘটনার দীর্ঘ ২০ বছর অতিবাহিত হচ্ছে। তারপরও মনের ওই ভয়ংকর স্মৃতি আজও মন থেকে চলে যায়নি।
ঘটনার দিন হযরত শাহজালাল (রহ:) মাজার প্রাঙ্গণে গেলে বৃটিশ হাই কমিশনারের সাথে গ্রেনেড হামলার শিকার হই। দীর্ঘ ১৮ দিন এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরলেও এখনও পায়ে ও হাতে অসংখ্য প্লিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে জীবন ধারণ করছি।
আজও সেই ২১মে’র দিনটি আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, সেই ভয়ংকর ঘটনার কথা। সিলেটের ইতিহাসে ২০০৪ সালের ২১ মে নির্মম একটি দিন। এ দিনে আমাদের গৌরব সিলেটি বংশোদ্ভুত বৃটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীসহ সরকারী কর্মকর্তা, আইনজীবী সাংবাদিকসহ সিলেটের অনেক মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় হযরত শাহজালাল (রহ:) মাজার প্রাঙ্গণ। কিন্তু ঘটনার বিচারিক রায় হলেও তা কার্যকর হয়নি এখনও।
এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলাটিও অধিকতর তদন্তে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ না করায় মামলাটির ভবিষ্যত নিয়ে আশংকা থেকেই গেল। এটা অত্যন্ত দুঃজনক ঘটনা। এ জঘন্য ঘটনায় অপরাধীরা কি শেষ পর্যন্ত রেহাই পেয়ে যাবে? ২১ মে শুক্রবার ২০০৪ সাল। সকাল ১১টা।
গোসল সেরে বের হই হযরত শাহজালাল (রহ:) মাজার প্রাঙ্গণের উদ্দেশ্যে। তখন সিলেটের প্রাচীনতম পত্রিকা দৈনিক যুগভেরীতে কাজ করতাম। বাসা ছিল নগরীর মীরবক্সটুলায়। বাসা থেকে হেটে হেটে যাত্রা শুরু করি। তখন সম্ভবত বেলা ১২ টা বা তার চাইতে বেশি হবে।
হযরত শাহজালাল (রহ:) দরগা প্রাঙ্গণের প্রধান ফটকের কাছে গিয়ে দেখি তৎকালীন সিলেটের জেলা প্রশাসক আব্দুল হোসেন ও তার গানম্যান জীবন মিয়াকে নিয়ে দাঁড়ানো। এ এলাকায় তেমন পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। তখন আমি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একজন পুলিশকে জিজ্ঞেস করলাম কোনো ভিআইপির আসবেন না কি? জবাবে বৃটিশ হাই কমিশনারের আগমন সম্পর্কে জানলাম।
তবে আগে জানতাম তিনি সিলেট আসছেন। মনে হয় দরগায় আসাটা স্বাভাবিক। কারণ যেকোনো ভিআইপি সিলেট আসলে দরগাহ হযরত শাহজালাল (রহ:) এর মাজারে আসেন। এ বিষয়ে আগের দিন অফিসেও আলোচনা হয়েছে তার সফরসূচি নিয়ে। শহরের অভ্যন্তরে আমাকেও নিউজ কভার এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
তবে মাজারে আসবেন এটা আমাকে নিশ্চিত করা হয়নি। যাক দরগার অবস্থানের কিছু সময় যাওয়ার পর তৎকালীন বৃটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী সেখানে আসলে জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন তাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে শাহজালাল (রহ:) মাজারে নিয়ে যান।
তখন ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাথে কুশল বিনিময় করে পরিচয় দিই। তাকে কেমন আছেন বললে, তিনি ভাল আছেন বলে জানান। সিলেটি ভাষায় তিনি একথা বলেন। তারপর তাকে মাজারে জিয়ারতে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাজার জিয়ারত শেষে হযরত শাহজালাল (রহ:) মসজিদে ঢুকে প্রথম কাতারে জুমার নামাজ আদায় করেন। তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হযরত শাহজালাল (রহ:) মাজারে জুমার নামাজ শেষে প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যে বের হন।
এ সময় আমিও মসজিদের প্রধান সিড়ি থেকে নামার সময় তার কাছ থেকে কুশল বিনিময় করে বিদায় নেই। উৎসুক জনতা তাদের প্রিয় হাই কমিশনার বের হওয়ার সাথে সাথে কমমর্দন করতে থাকেন।
তিনি যখন মসজিদের সিড়ি থেকে নামেন তখন আমি মহিলা ইবাদতখানার সামনে ছিলাম। তিনি মানুষের ভিড়ের জন্য করমর্দন করতে করতে এগুতে পারছিলেন না। মানুষ আর মানুষ। সবাই চায় প্রিয় হাই কমিশনার এর সাথে করমর্দন করতে।
আমি প্রধান ফটকের বাম দিকের একটি রাস্তা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করি, সেখানেও মানুষের ভিড়। তারপর আর এদিকে যাওয়া হলো না। কারণ প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজে বিপুল মানুষের উপস্থিতি হয় দরগাহ মসজিদে। তাই বাধ্য হয়ে প্রধান ফটক দিয়ে যাওয়ার জন্য সামনে আসলাম।
তখন আমি মাজার প্রাঙ্গণে খেজুর গাছের পাশে ছিলাম। ইচ্ছা এখন সামনের দিকে যাওয়ার। তারপর হঠাৎ বিকট শব্দ হলো। কালো ধোয়ায় চারদিক আচ্ছন্ন। বারুদের গন্ধে ও বিকট শব্দ নাক মুখ কান যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। দু’পা তখন মনে হয় অবশ হয়ে গেছে।
তখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। কিছু বলতে পারছিনা। পায়ে জ্বালা পোড়া শুরু হয়ে গেছে। সে সময় বোঝা গেছে যে আর বাঁচবো না। কাত হয়ে মাজার প্রাঙ্গণে পড়ে থাকলেও কেউ কাছে আসছেন না। তখন জ্ঞান থাকতে আমি ফোন করি যুগভেরীর তৎকালীন ফটো সাংবাদিক শেখ আশরাফুল আলম নাসির এর মোবাইলে।
তখন তিনি ফোন কেটে দেন। তারপর ফোন করি তৎকালীন যুগভেরীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আজিজ আহমদ সেলিমকে। তিনি ফোন ধরলে আমি বলি মাজারে গ্রেনেড হামলা হয়েছে। আমিও আহত হয়েছি। তারপর আর কিছু বলতে পারি না।
কিছু হুশ হলে দেখি এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪র্থ তলায় বারান্দায় পড়ে আছি। পুলিশ ও জনগণ আমাকে হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন। তখন আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
এ সময় দেখি আমাদের এলাকার আকিলপুর গ্রামের সফিক আহমদ নামের এক যুবক হাসপাতালের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করছে। সে আমার অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে বলে কী হয়েছে? তখন তাকে আমার পকেটে থাকা মোবাইল বের করতে বলি এবং আমার বাড়ীর মোবাইল নম্বর দেখিয়ে বাড়ীতে জানাতে বলি।
তারপর সফিকের সাথে পুলিশসহ অন্যান্য লোকজন আমাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৪নং ওয়ার্ডে মেঝেতে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আমাকে মেঝেতে ফেলে রাখলেও কোন ডাক্তার তখন আসেননি।
এ সময় আবার প্রচুর রক্তকরণ হচ্ছে। মাজার প্রাঙ্গণ থেকে ওসমানী হাসপাতাল পর্যন্ত কিন্তু প্রচুর রক্তকরণ হয়েছে। এতে আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম।
তারপর ওসমানী হাসপাতালে তখনকার দৈনিক যুগভেরীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আজিজ আহমদ সেলিম, জাবের আহমদ চৌধুরী ও সাংবাদিক মির্জা সোহেল আমাকে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেন। তখন আমাকে প্রচুর স্যালাইন দেওয়া হয়। তারপর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়।
আমার মনে কিছুটা শান্তি আসে এবং কখন ঘুমিয়ে পড়ি তা বলতে পারি না। তারপর বাড়ি থেকে আমার আত্মীয় স্বজন আসেন। হাসপাতালে দীর্ঘ ১৮ দিন চিকিৎসাধীন ছিলাম। এ সময় আমার ডান পায়ের উরুতে মেজর অপারেশন করে গ্রেনেডের অংশ বের করা হয়।
এটা ছিল বড় আকারের। তারপরও শরীরের অনেক স্থানে প্রিন্টার রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে অনেক গণ্যমান্য লোকজন আমাকে দেখেন ও সান্ত্বনা দেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বষির্য়ান আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী মরহুম আকবর হোসেন, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের হুইপ ফজলুল হক আসপিয়া, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, নিখোজ বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি এম. ইলিয়াস আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আ.ন.ম শফিকুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ইফতেখার হোসেন শামীম, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সিলেট জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আওয়ামলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রহমান, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মো. আশফাক আহমদ, বর্তমান সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি বদরুজ্জামান সেলিম, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল খালিক, কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাটির সিলেট ইউনিটের সেক্রেটারী আব্দুর রহমান জামিল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক খান, সাবেক মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব মাহমুদ হোসেন মঞ্জু, এডভোকেট কল্যাণ চৌধুরী, সিলেট ল কলেজের সাবেক জিএস মো. আলমগীর হোসেন, সুরমা বয়েজ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও যুব সংগঠক আনোয়ার হোসেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টির নেতৃবৃন্দ, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সিলেট ইউনিটের নেতৃবৃন্দ, সিলেট প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, বিএমএ’র নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ সাংবাদিক সহকর্মীরা। এ ছাড়া সুরমা বয়েজ ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি আফজাল রশীদ চৌধুরী বিশেষভাবে খোঁজ খবর নিয়েছেন। তারা আমার খোজ খবর নেন ও আশু সুস্থতা কামনা করেন। সকলের দোয়ায় আমি বেঁচে গেলেও বুক, হাত ও পায়ে অনেক প্লিন্টার নিয়ে জীবন যাপন করছি। এগুলোর জন্য হাতে ও পায়ে মাঝে মধ্যে যন্ত্রণাও হয়। এ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় এতো রক্তকরণ হওয়ায় আমার শরীর রক্তে ভেসে গিয়েছিল। তখন মনে হয়েছিল হয়তো আমি আর বাঁচব না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে শরীরে প্লিন্টার নিয়ে এখনও বেঁচে আছি। হাসপাতালে থাকাকালীন পুলিশ, সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সাংবাদিকরা দেখা করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর হামলার ২০ বছর অতিক্রম হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার ৫ জনের মধ্যে ৩ জনের ফাঁসি কার্যকর ও দু’জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের রায় হয়েছে। বিস্ফোরক মামলার বিচার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় সিআইডি পুলিশ আমাদের আহতদের বিভিন্নভাবে স্বাক্ষ্য নিয়েছে। ঘটনাস্থলে এনে সাক্ষীদের ডামি ছবি তুলেছেন। এছাড়া আমার কাছ থেকে স্থানীয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর সাথে গ্রেনেড হামলার ঘটনার ২০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত হামলাকারীদের শাস্তি হয়নি। গ্রেনেড হামলার দীর্ঘদিন পর কোতোয়ালী থানার এক এসআই নোটিশ দেন কোতোয়ালী থানায় উপস্থিত হওয়ার জন্য। রাষ্ট্রীয় কাজের স্বার্থে কোতোয়ালী থানায় গেলে সিআইডির তৎকালীন এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান, তৎকালীন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আমিসহ কয়েক জন আহত লোকের সাক্ষ্য নেন এবং আহতদের একটি গাড়ীতে করে দরগাহ গেইট প্রাঙ্গণে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ডামি ছবি তুলতে হবে। তখন আমরা সেদিনের অবস্থানের ডামি ছবি তুলতে যাই এবং আমাদের বক্তব্যও তিনি রেকর্ড করেন। তখন আমরা এ ঘটনার সুবিচার দাবি করি। তারপর সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল৬ এ হত্যা ও বিস্ফোরন মামলার স্বাক্ষ্য প্রদান করি। তবে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৩ জনের ফাসি ও দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন এবং তা কার্যকরও হয়েছে। এছাড়া সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ৬ এ চার্জশীট ভূক্ত ৫৬ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তে চলে যায়। তারপর আরো ২জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। এ মামলাটি প্রথমে সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার চলে। বর্তমানে মামলাটি স্থানান্তর হয়ে জন নিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ নিরোধ ট্রাইব্যুনালে বিচারধীন রয়েছে। এ রকম জঘন্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে প্রাণহানী সহ আমাদের মতো মানুষের যাতে প্রাত্যহিক যন্ত্রণা পেতে না হয় সে কামনা করছি।
(লেখকঃ সহ সভাপতি সংবাদ অনুবাদক ফোরাম,,বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্র ও বেকা সিলেট ইউনিটের প্রচার সম্পাদ