সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১০ , ২০ ২৫
ড্রীম সিলেট ডেস্ক
১৮ মার্চ ২০ ২০
৫:৩২ অপরাহ্ণ

উৎসবমুখর পরিবেশে ইংরেজি বিভাগের বনভোজন অনুষ্ঠিত 

ফাইজা রাফা:: উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের বার্ষিক বনভোজন। ২৯ ফেব্রুয়ারি রোজ শনিবার অনুষ্ঠিত হয় এই বনভোজনটি। মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আয়োজনে প্রায় ২৫০  জন শিক্ষার্থীর  পাশাপাশি ডিপার্টমেন্টের সকল শিক্ষকরা  এ বনভোজনে অংশগ্রহণ করেন।
ঐদিন নির্ধারিত সময় হবার আগেই , সকাল  থেকেই বনভোজন স্থলে যাবার জন্য সমবেত হতে থাকেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সকাল ৮টায় নগরীর জিন্দাবাজারস্থ পুরাতন ক্যাম্পাস আলহামরা সামনে থেকে ১০ টি বাস নিয়ে , পানিউমদা দেওয়ান বাড়ি, কুইন হিল ইষ্টেট , নবীগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে ৷ যথাসময়ে গন্তব্যেস্থলে পৌঁছলে , শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠেন বর্ণিল সব আয়োজনে।
দিনব্যাপী আয়োজনে আনন্দ আড্ডামুখর পরিবেশ তৈরি হয়। এসময়  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককরা , তাদের নিজ নিজ স্মৃতিচারণ সহ শিক্ষার্থীদের সাথে জম্পেশ আড্ডায় মেতে ওঠেন। 

মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি   মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ও ডিন,অধ্যাপক ড. সুরেশ রঞ্জন বসাক বলেন, স্টাডিট্যুর বা বনভোজন যাই বলি না কেন  বনভোজনের মাধ্যমে পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব,সহযোগিতা,সম্মান ইত্যাদি প্রকাশের একটি সুযোগ  হয়ে থাকে।  তাছাড়া ও ইংরেজি বিভাগের একটি ঐতিহ্য আছে , মধ্যাহ্নভোজের পরে ইংরেজি বিভাগের যে  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে তা অত্যন্ত মনমুগ্ধকর হয়ে থাকে।   এর মাধ্যমে অনেক প্রতিভার বিকাশ পাচ্ছে , ভবিষ্যতে এ এই ধারা অব্যাহত  ও বজায় থাকুক ।

ইংরেজি বিভাগের প্রধান অনিক বিশ্বাস বলেন, বনভোজনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। বনভোজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে  ইউনিটি সৃষ্টি হওয়ার একটি জায়গা তৈরি হয়। যা অত্যন্ত  গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কিছু শেখা যায়। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিনোদনের অনেক প্রয়োজন রয়েছে। তাই তিনি ভবিষ্যতে সকলকে বনভোজনে অংশগ্রহণ করার আহবান করেন৷ 
অপর দিকে , সহকারী অধ্যাপক ড.রমা ইসলাম বলেন, বনভোজনের মূল উদ্দেশ্য হলো  পরস্পরের প্রতি সম্পর্ক ভালো করা,একে অপরের সম্পর্কে জানা। তাদের সাথে সময় কাটানো কিন্তু  বনভোজনে আসলে শিক্ষার্থীরা সেলফি নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে, একে অপরকে সময় দেওয়ার মতো সময় তাদের হয় না।বর্তমানে সেলফি একটি নেশাতে পরিণত হয়েছে । তাই তিনি  ছবি দেদারছে না তুলে, সৃজনশীলভাবে তোলাটা উচিত বলে মনে করেন।

 আয়েশা, শিউলি ,  অনিক  ,সোহেল  বলেছেন যে  বার্ষিক বনভোজনে আসতে তাদের অনেক ভালো লাগে l   ইংরেজি বিভাগের পারিবারিক একটি বন্ধন রয়েছে ৷ শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ও সময় কাটিয়েছেন অনেক আনন্দ নিয়ে। তাদের ভাষায়, ক্লাস রুমের বাইরে এমন সময়গুলো ভবিষ্যতে ভালো কাজের অনুপ্রেরণা জোগাবে।
শিক্ষার্থী  আয়েশা বলেন, একসময় বিশ্ববিদ্যালয় জীবন সম্পন্ন করে কর্মজীবনে চলে যাবো। এই ধরনের মুহূর্ত হয়তো আর ফিরে পাবো না। তখন ভীষণ মনে পড়বে সবাইকে।
শিক্ষার্থী অনিক বলেন, মানুষ স্বভাবতই ভ্রমণপিপাসু। ভ্রমণের কথা শুনলে মনটা আনন্দে উদ্বেলিত হয় না, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আর তা যদি হয় শিক্ষা সফর, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। জ্ঞানার্জনের জন্য দুটি প্রথা সমাজে বেশি প্রচলিত। একটি বইপড়া, অন্যটি ভ্রমণ।
এদিকে পড়ন্ত বিকেলে  মনোরম পরিবেশে  বনভোজনের স্থানটিকে মাতিয়ে রাখা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। মধ্যাহ্নভোজের পরে শুরু হয় ইংরেজি বিভাগের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যেখানে অংশগ্রহণ করেন ইংরেজি বিভাগের  কিছু শিক্ষার্থীরা।  বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তারা তুলে ধরে ।  ইংরেজি বিভাগের বনভোজনের মূল কেন্দ্রবিন্দু  হচ্ছে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সকলের মন খুলে খুব আনন্দ  করেছে। ইংরেজি বিভাগ সবসময় ইংরেজি কবিতা ,ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে  ব্যস্ত  থাকার পাশাপাশি , তারা বাংলা সংস্কৃতির প্রতিও অনেক ভালো  ও মনোযোগী হয়ে থাকে ৷
বনভোজনে সারা দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত আয়োজনের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলাসহ অন্যান্য ইভেন্টে ৷ খেলাধুলায় বিজয়ী শিক্ষকবৃন্দ ও  শিক্ষার্থীদের হাতে আকর্ষনীয় পুরষ্কার প্রদান করা হয়।  সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে এবার বিদায়ের পালা  বিকাল পাঁচটার দিকে বাড়ি ফেরার যাত্রা শুরু৷বার্ষিক বনভোজনে শিক্ষক  এবং  শিক্ষার্থীরা অনেক আনন্দ উপভোগ  করেছেন। সকলের  স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ  ছিল ।
বনভোজনের শেষে শিক্ষা সফরের গুরুত্ব আরোপ করে বক্তারা বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বনভোজন অত্যন্ত প্রয়োজন৷শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজের চোখে দেখে শুনে অনেক জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং সৃজনশীলতা  এবং তাদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পায়।সকলের মধ্যে একটি আস্থা ভালবাসা,  বিশ্বাস  ,দায়িত্ব, পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতার  ইত্যাদি মনোভাব সৃষ্টি হয়৷সর্বোপরি ইংরেজি বিভাগের বার্ষিক বনভোজন সফল ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী বছর এমন মিলন মেলায় আবারো সবাই একসাথে একত্রিত হবে এই কামনা করেছেন সকলেই।

ফেইসবুক কমেন্ট অপশন
এই বিভাগের আরো খবর
পুরাতন খবর খুঁজতে নিচে ক্লিক করুন


আমাদের ফেসবুক পেইজ